১১নং রাধাকানাই ইউনিয়ন পরিষদের আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান মো: গোলাম কিবরিয়া তরফদার উদ্যোগে জাতিরপিতাবঙ্গবন্ধুশেখমুজিবুররহমানের৪১তমশাহাদতবার্ষিকীকেএকমিলাদওদোয়াঅনুষ্ঠানেরআয়োজনকরাহয়েছে। শোকাবহ ১৫ আগস্ট; আজ জাতীয় শোক দিবস ।১৯৭৫ সালের এইদিনের কালরাত্রিতে ঘটেছিল ইতিহাসের সেই কলঙ্কজনক ঘটনা। কিছু উচ্ছৃংখল ও বিপথগামী সৈনিকের হাতে সপরিবারে প্রাণ দিয়েছিলেন বাঙ্গালি জাতির ইতিহাসের হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান, স্বাধীনতার মহান স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। নৃশংস এ ঘটনায় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সেদিন আরও যারা প্রাণ হারিয়েছিলেন তারা হলেন- বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বড় ছেলে শেখ কামাল, মেঝ ছেলে শেখ জামাল, ছোট ছেলে শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল, রোজী জামাল, ভাই শেখ নাসের ও কর্ণেল জামিল। ইতিহাসের এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডে সেদিন আরো প্রাণ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফজলুল হক মনি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, শহীদ সেরনিয়াবাত, শিশু বাবু, আরিফ রিন্টু খানসহ অনেকে। ধানমন্ডির ঐতিহাসিক ৩২ নম্বরের বাড়িতে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু নিহত হলেও সেদিন পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালার অসীম কৃপায় দেশে না থাকায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে। তাঁদের মধ্যে বড় মেয়ে আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ছোট মেয়ে শেখ রেহানা।
বাংলাদেশের হৃদয়ের গভীর থেকে উৎসারিত দেশপ্রেমে যার মনপ্রাণ সিক্ত ছিল, পরাধীনতার গোলামির জিঞ্জির ভেঙ্গে যিনি হাজার বছরের নিপীড়িত, নিগৃহীত, বঞ্চিত বাঙ্গালি জাতির জন্য স্বাধীন আবাসভূমি সৃষ্টির লক্ষ্যে জীবনজয়ী সংগ্রামে লিপ্ত হয়ে কৈশোর, যৌবন ও পৌঢ়ত্বকালকে উৎসর্গকরণে ইতিহাসের এই মহিমান্বিত মহাপুরুষের প্রাণ সংহার করলো বিশ্বাস ঘাতক একটি ক্ষুদ্র ঘাতকচক্র। জঘন্যতম এ হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে বাঙ্গালির ইতিহাসে কালিমালিপ্ত অধ্যায় সংযোজিত হয়। জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর দীর্ঘদিন বাংলাদেশের রাজনৈতিক আকাশ ছিল তিমিরাচ্ছন্ন। কেননা- এর মধ্যেদিয়ে দেশ পরিচালনার নেতৃত্ব গ্রহণ করে অনির্বাচিত সামরিক সরকার। তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ইন্ধনে আশ্রয়-প্রশ্রয় পায় বঙ্গবন্ধুর খুনিরা। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় তাদের বিচারের পথও রুদ্ধ করা হয়।
ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সমগ্র পৃথিবীতে যত নৃশংস খুনের ঘটনা ঘটেছে ১৫ আগস্টের ভয়াল ঘটনা সব কিছুকেই ছাড়িয়ে গিয়েছিল। সেদিন দুগ্ধপোষ্য শিশু, অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী, প্রতিবন্ধী কেউই ঘাতকদের হাত থেকে রেহাই পায়নি। অন্তঃপুরবাসিনী যে নারী সাধারণের সামনে নিজেকে কখনই প্রকাশ করেননি তিনিও নৃশংস খুনের শিকার হন। বিশ্ব বিবেক এ খুনের ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে যায়। কিন্তু তারপরও দীর্ঘদিন সাংবিধানিক ইনডেমনিটি দিয়ে অপরাধীদের আড়াল করে রাখা হয়েছিল। এমনকি তারা দোর্দন্ড প্রতাপ নিয়ে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অঙ্গনে দাপিয়ে বেড়িয়েছে এবং অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। ফলে দীর্ঘদিন জাতিকে বয়ে নিয়ে বেড়াতে হয়েছে সেই নৃসংশ খুনের কলংক।
একটি জাতি রাষ্ট্রের স্থপতিকে সপরিবারে খুনের ঘটনার পর অপরাধীদের দাম্ভিকতা প্রদর্শন পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল ঘটনা। দীর্ঘ সময় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে তাদের পরিবারের সব সদস্যকে হারানোর মর্মান্তিক বেদনা বয়ে বেড়াতে হয়েছে। শুধু তাই নয়, জাতির কাছে পিতা, মাতা, ভাই ও স্বজন হারানোর বিচার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়েছে তাঁদের। কিন্তু রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তাঁদের এই মর্মযাতনা কেউ অনুভব করেনি।
বর্তমানে মানবাধিকারের যে চেতনা এবং ধারণা নিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায় কাজ করছে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু খুনের ঘটনায় তারাও স্তম্ভিত। কিন্তু রাষ্ট্রশক্তির প্রত্যক্ষ মদদে অপরাধীরা পার পেয়ে যাওয়ায় দীর্ঘকাল তারা নির্বাক ছিল। সময়ের পালাবদলে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ উন্মুক্ত হয়। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে সরকার অপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ নেয়। অনেক জটিলতায় বিচার সম্পন্ন হলেও রায় কার্যকর করতে আরো ১০ বছর লেগে যায়। ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না আসতে পারায় খুনিদের বিচারের রায় কার্যকর আবারো অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ক্ষমতায় আসার পর বহু প্রতীক্ষিত বিচারের রায় কার্যকর করা হয়। জাতি মুক্তি লাভ করে কলঙ্কময় সেই অভিশাপ থেকে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি নাম, উপমহাদেশের একটি অধ্যায়, একটি ইতিহাস। তার সমগ্র জীবনটিই ছিল সংগ্রামমুখর। সংগ্রামের মধ্যেই বড় হয়েছিলেন তিনি। তৎকালীন বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। ছাত্র অবস্থায় তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ‘৫২-এর ভাষা আন্দোলনেও তিনি ছিলেন সংগ্রামী নেতা। বাঙ্গালি জাতির মুক্তি সনদ ৬ দফার প্রণেতাও ছিলেন শেখ মুজিব। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগকে এদেশের গণমানুষের আশা-আকা´খার প্রতীকে পরিণত করেন।
অবিসাংবাদিত এই নেতার জীবন চলার পথটিও ছিল কন্টকাকীর্ণ। পাকিস্তানের সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তুলে ষাটের দশক থেকেই তিনি বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদের অগ্রনায়কে পরিণত হন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে লাখো জনতার উত্ত
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস